হরির অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। এমনিতেই রোগাটে শরীর, গায়ের রঙ মিচমিচে কালো, বয়স বছর তিরিশেক।
হরির বৌ ওকে মোটেই পছন্দ করেনা। বেলঘরিয়া বাপের বাড়ি শ্বশুরবাড়ি কল্যাণীতে। বিয়ের পর জীবনের কটা দিন শ্বশুরবাড়ি ছিল, তা গুনে বলা কঠিন। শুনলাম নাকি পাড়ার কোন নাগরের সঙ্গে হরির বৌয়ের 'লাইন' আছে।
হরির একটা মেয়ে আছে, সে হরিকে কোনওদিন বাবা বলে ডাকেনা। মা শিখিয়ে দিয়েছে... ওটা ওর বাবা না।
বিয়ে করার পর বৌয়ের সঙ্গে হরির ঘর করা হয়নি। সাংসারিক সুখ কী জিনিস, তা কোনওদিন চোখে দেখেনি। ডিভোর্স পায়নি যে নতুন করে ঘর করার স্বপ্ন দেখবে... ওদিক থেকে বৌ কেস ঠুকে বসে আছে... হরির মুখের অকপট স্বীকার "আমি কী সরকারি চাকরি করি যে এত টাকা খেসারত দিয়ে পেতক হব!'
হরি হোটেলে কাজ করে। এই স্টেশনের ধারের জয় মা কালি হিন্দু হোটেল অথবা মা দুর্গা হোটেল। দৈনিক আয় একশো পঞ্চাশ টাকা.... সাথে খাওয়া ফ্রী।
এরকম এক অবস্থায় হরির হঠাৎ আমাদের বাড়িতে আগমন। ঘটনা কী?
'মায়ের পুরনো জমিটাতে একটা টালি দেওয়া এক কুটুরি ঘর করে শান্তিতে থাকতে চাই'। কাজকর্ম বলতে ঐ স্টেশনের ধারের যেকোনও হিন্দু হোটেল... বাসন ধোয়া অথবা খেতে দেওয়া।
বাবার দয়াশীলতা, সহানুভূতিশীল এবং পরোপকারী মনোভাব আমার পাঁচ ফুট আট ইঞ্চির শরীরটাকে অনেকবার নুইয়েছে। ভাল চাকরির চেষ্টায় ঘরের অর্ধেক অংশ ভারতের অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রশাসন ব্যবস্থা সম্পর্কিত বইতে পরিপূর্ণ। তাহলে হরির কী কোনও ব্যবস্থা আজ হবেনা?
বিকেলে আমি কফি খাচ্ছি, কাপ গুলো ছবির মতই চারদিনের চারটে টেবিলে সাজানো... আমি শুনছি....
"এই তোর ঝুড়ি, এই দাঁড়িপাল্লা, ঝোলাগুড়ের কৌটা, বাটখারা..। এক ট্রেন না পেলে আরেক ট্রেন ধরিস... তাড়াহুড়ো করিস না। আজ পনেরো কেজি পাটালি আর পাঁচ কেজি ঝোলা গুড় আছে... কাল বেঁচে আয়... তারপর বেশি নিস।
তোর যা শরীরের অবস্থা! চাগাতে গিয়েই হুমড়ি খেয়া পড়ে যাস, মাথাই নিয়ে বেচবি কীভাবে?
আর শোন, ঠিক সময়ে হোটেল থেকে ভাত খেয়ে নিস...যা কাজ করবি শরীর বাঁচিয়ে"
- জামাইবাবু, শনিমন্দিরে গিয়ে পাঁচটাকার মন্ডা কিনে পূজো দিয়ে আসবো?
- আজ তার দরকার নেই। কাল বিক্রিবাট্টা করে এসে দিস।
বাবাকে জীবনে অনেক লোকের উপকার করতে দেখেছি, আজও দেখলাম। এরকম অনেক লোক আছে আমাদের বাড়ি দীর্ঘদিন ছিল। কাজ করে মোটামোটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের জায়গাতে ফিরে গিয়েছে।
আমি তখন কফি খাচ্ছিলাম.... ভাই নতুন হোয়াট্সঅ্যাপ করা শিখেছে... হঠাৎ আমায় জিজ্ঞেস করলো....
- বাবার মত হতে পারবি কোনওদিন?
- মানে?
- বাবার মত এই সহজ সরল লোকদের উপকার করতে পারবি কোনোদিন?
আমি মাথা নাড়িয়েছিলাম।
পারব না। সত্যিই আমি কোনওদিন বাবার মত হতে পারব না।
এই লোকটার পা ছুঁয়ে প্রণাম করিনি বহুদিন... কিন্তু মাঝেমধ্যেই মাথানত করতে বাধ্য হই.......
হরির বৌ ওকে মোটেই পছন্দ করেনা। বেলঘরিয়া বাপের বাড়ি শ্বশুরবাড়ি কল্যাণীতে। বিয়ের পর জীবনের কটা দিন শ্বশুরবাড়ি ছিল, তা গুনে বলা কঠিন। শুনলাম নাকি পাড়ার কোন নাগরের সঙ্গে হরির বৌয়ের 'লাইন' আছে।
হরির একটা মেয়ে আছে, সে হরিকে কোনওদিন বাবা বলে ডাকেনা। মা শিখিয়ে দিয়েছে... ওটা ওর বাবা না।
বিয়ে করার পর বৌয়ের সঙ্গে হরির ঘর করা হয়নি। সাংসারিক সুখ কী জিনিস, তা কোনওদিন চোখে দেখেনি। ডিভোর্স পায়নি যে নতুন করে ঘর করার স্বপ্ন দেখবে... ওদিক থেকে বৌ কেস ঠুকে বসে আছে... হরির মুখের অকপট স্বীকার "আমি কী সরকারি চাকরি করি যে এত টাকা খেসারত দিয়ে পেতক হব!'
হরি হোটেলে কাজ করে। এই স্টেশনের ধারের জয় মা কালি হিন্দু হোটেল অথবা মা দুর্গা হোটেল। দৈনিক আয় একশো পঞ্চাশ টাকা.... সাথে খাওয়া ফ্রী।
এরকম এক অবস্থায় হরির হঠাৎ আমাদের বাড়িতে আগমন। ঘটনা কী?
'মায়ের পুরনো জমিটাতে একটা টালি দেওয়া এক কুটুরি ঘর করে শান্তিতে থাকতে চাই'। কাজকর্ম বলতে ঐ স্টেশনের ধারের যেকোনও হিন্দু হোটেল... বাসন ধোয়া অথবা খেতে দেওয়া।
বাবার দয়াশীলতা, সহানুভূতিশীল এবং পরোপকারী মনোভাব আমার পাঁচ ফুট আট ইঞ্চির শরীরটাকে অনেকবার নুইয়েছে। ভাল চাকরির চেষ্টায় ঘরের অর্ধেক অংশ ভারতের অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রশাসন ব্যবস্থা সম্পর্কিত বইতে পরিপূর্ণ। তাহলে হরির কী কোনও ব্যবস্থা আজ হবেনা?
বিকেলে আমি কফি খাচ্ছি, কাপ গুলো ছবির মতই চারদিনের চারটে টেবিলে সাজানো... আমি শুনছি....
"এই তোর ঝুড়ি, এই দাঁড়িপাল্লা, ঝোলাগুড়ের কৌটা, বাটখারা..। এক ট্রেন না পেলে আরেক ট্রেন ধরিস... তাড়াহুড়ো করিস না। আজ পনেরো কেজি পাটালি আর পাঁচ কেজি ঝোলা গুড় আছে... কাল বেঁচে আয়... তারপর বেশি নিস।
তোর যা শরীরের অবস্থা! চাগাতে গিয়েই হুমড়ি খেয়া পড়ে যাস, মাথাই নিয়ে বেচবি কীভাবে?
আর শোন, ঠিক সময়ে হোটেল থেকে ভাত খেয়ে নিস...যা কাজ করবি শরীর বাঁচিয়ে"
- জামাইবাবু, শনিমন্দিরে গিয়ে পাঁচটাকার মন্ডা কিনে পূজো দিয়ে আসবো?
- আজ তার দরকার নেই। কাল বিক্রিবাট্টা করে এসে দিস।
বাবাকে জীবনে অনেক লোকের উপকার করতে দেখেছি, আজও দেখলাম। এরকম অনেক লোক আছে আমাদের বাড়ি দীর্ঘদিন ছিল। কাজ করে মোটামোটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের জায়গাতে ফিরে গিয়েছে।
আমি তখন কফি খাচ্ছিলাম.... ভাই নতুন হোয়াট্সঅ্যাপ করা শিখেছে... হঠাৎ আমায় জিজ্ঞেস করলো....
- বাবার মত হতে পারবি কোনওদিন?
- মানে?
- বাবার মত এই সহজ সরল লোকদের উপকার করতে পারবি কোনোদিন?
আমি মাথা নাড়িয়েছিলাম।
পারব না। সত্যিই আমি কোনওদিন বাবার মত হতে পারব না।
এই লোকটার পা ছুঁয়ে প্রণাম করিনি বহুদিন... কিন্তু মাঝেমধ্যেই মাথানত করতে বাধ্য হই.......
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন