- একশো টাকা হবে আপনার কাছে?
- ঠিক চিনতে পারলাম না!
- আমিও চিনি না। আসলে বাসে ওঠার পর আমার ওয়ালেট খোয়া যায়। স্টেশন পর্যন্ত বাসে এলাম, টাকা দিতে পারিনি। খুব খিদেও পেয়েছে.... পেটের নীচে হাল্কা চিনচিন করা ব্যথা শুরু হয়েছে। আর কোনও রাস্তা খুঁজে না পেয়ে আপনার কাছে হাত পাতলাম।
- আমিই কেন? আরও অনেকেই আছে স্টেশনে! সুন্দরী বলে?
- আপনার মিছে অহংকারে আমার পেট ভরবে না। এটা একটা র‍্যান্ডম সিলেকশন বলতে পারেন।
- ও তাই!
- হুম।
- আচ্ছা। কী খাবেন বলুন? ফ্রায়েড রাইস না বিরিয়ানি?
- পিস পাউরুটি দইয়ে ভিজিয়ে।
- আপনি তো অদ্ভুত লোক মশাই, অভুক্ত লোককে খাওয়াতে ভাল লাগে...তাই বলে দই পাউরুটি এখন কোথায় পাই?
- আমি কিন্তু অন্য কিচ্ছু খাইনা।
- আচ্ছা..... চলুন... তা নাম কী?
- নীরব।
- নামকরণের কোনও সার্থকতা নেই।
- কেন মনে হল?
- বেশ তো কথা বলেন।
- আপনার নাম কী?
- নিরালা......নিরালা রায়।
- দেখতে সুন্দরী হলেও নামটা খুব বিচ্ছিরি।
- আমার ছোটদাদু আমায় ঝগড়ুটে বলে ডাকে।
- ওটাই ঠিক।
- হুম.... কী করা হয়?
- দেখে কী মনে হচ্ছে?
- চাষবাস...... একজন দুর্দশাগ্রস্ত চাষি।
- ঠিকই ধরেছেন....... আমি বাচ্চাদের পড়াই।........আপনি?
- উইপ্রোতে আছি।
- সেটা আবার কী?
- আই.টি কোম্পানি। আচ্ছা! আপনার গালটা এত লালচে কেন? চান করার পর মুখে ডাবর লাল দাঁত মাজন মাখেন?
- বড্ড বাজে বকেন...দোকান এসে গেছে।
- আচ্ছা, আপনি ভিতরে গিয়ে বসুন...আমি খাবার অর্ডার দিচ্ছি।
- আমি দাঁড়িয়ে খাই।
- হায়! আল্লাহ! আমি কার পাল্লায় পড়লাম!
- নীরবের।
- থাক.....আর বলতে হবেনা।

- পেট ভরেছে?
- হুম। এবার ট্রেনের টিকিট কাটার টাকা দিন....
- এরপর বিয়ে করতে চাইবেন নাতো?
- চাইলেই কী সব পাওয়া যায়?
- কন্ট্যাক্ট নম্বর পেতে পারেন....... যদি জ্বালাতন না করার আশ্বাস দেন।
- বলুন....
- নাইন ফোর...........।

                        .................

- হ্যালো!
- কে?
- স্টেশনের ভিখিরি।
- নীরব?

Sudip Sen
14 Dec 15