#Paperless_Editorial

দেশে রাওলাট আইন জারি হইয়াছে।
২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের গ্রেপ্তারের প্রেক্ষিতে শাসক শ্রেণির আর এক স্বৈরাচারী রূপ দেখিয়াছে দেশের জনসাধারণ। পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বারংবার কর্ণগোচর হইয়াছে, কিন্তু এ হেন সক্রিয়তা দেশের জনগণ প্রথম দেখিতেছে বলে আমার অভিমত।
ছাত্রদের গ্রেপ্তারের পর যেখানে পুলিস বীরত্বের সহিত বলিতেছে ছাত্ররা প্রমাণ করুক যে তাহারা নির্দোষ, তাহার পর তাহাদের দোষত্রুটি প্রমাণ করা হইবে-- এহেন পরিস্থতিকে রাওলাট আইন বলিতে কোনও দ্বিধা নেই।

ভারতে বৈপ্লবিক আন্দোলন বিস্তার এবং তাহার সম্ভাব্য প্রতিরোধ সম্পর্কে বিচার বিবেচনা করিবার উদ্দেশ্য ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি লর্ড রাওলাট এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হইয়াছিল। এই কমিটির সুপারিশক্রমে ১৯১৯ খ্রিস্টব্দের দুটি দমনমূলক বিল উত্থাপিত হয়। এই বিলে বলা হইয়াছিল, সন্দেহভাজন যে-কোনও ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করা হইবে, বিনা বিচারে তাদের অনির্দিষ্ট কাল বন্দি রাখা হইবে।

জাঠ আন্দোলনকে কেন্দ্র করিয়া সরকারের অনমনীয় মনোভাব, হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা, কাশ্মীর প্রসঙ্গ এবং আফজল গুরুর ফাঁসিকে কেন্দ্র করিয়া ভারতবর্ষের রাজনীতি উত্তাল হইয়াছে।
সাম্প্রতিক দুইটি রাজ্যে লোকসভায় বিজয়ী দলের পরাজয় নিজেদের ভাবমূর্তি রাখার অক্ষমতাকে এক প্রকার নিশ্চিত করিয়া দিয়াছে।
দেশে অসহিষ্ণুতা বাড়িয়াছে একই সঙ্গে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের আঁচ ছড়াইয়া পড়িতেছে অন্য বিশ্বাবিদ্যালয়ে। অর্থনীতিতে বেসরকারিকরণ বাড়িতেছে, হারায়তেছে নব প্রকল্পগুলির জনপ্রিয়তা।
সাংসদ আদর্শ গ্রাম ধুঁকতে বসিয়াছে , মেক ইন ইন্ডিয়া কতটা গুরুত্ববহ তাহা সন্দেহাতীত, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের নিত্যনতুন ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর আসিতেছে, বাড়িতেছে সারচার্জ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়তো আর নাইটহুড পদত্যাগ করিতে পারিবেন না, তৎসত্ত্বেও কয়েক জন মন্দাক্রান্তা সেন প্রতিবাদ ঠিকই করিয়াছে।

তবু, সব কিছুর পরেও আরও বড় ভয় অবশ্য রহিয়াছে।

মাইকেল ও ডায়ারের নেতৃত্বে গুলি চালনার পর্বটা এখনও যে বাকি রহিয়া গিয়েছে.......

Sudip Sen
26 Feb 16