এই নিয়ে সতেরোটা ছবি তুলেছি, আগের ষোলোটা অনেক ভেবেচিন্তেও মুছে ফেলতে পারিনি।

পাহাড় আমার খুব পছন্দ, বন্ধ্যাপাহাড়। যেখানে কোনও গাছপালা নেই, শুধু বড়বড় পাথরের চাঁই। সেইসমস্ত মৃত পাহাড়ের কানেকানে বহুবার বলেছি "পাহাড়, আমি তোমার মতই কুৎসিত। "

সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে ঈশ্বরদ্রোহিতা করা, আমি ঠিক তাই। বহুবার মনেমনে বাবা-মাকে তিরস্কার করেছি, মনের জমে থাকা অধিকতর অনুযোগ তাদের বিপক্ষে।

কেন ঈশ্বর! কেন? কী কারণে কিছু মানুষ সুন্দর আর কিছু কুদর্শন? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দিকভ্রান্তের মত আমি সেইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজি... কেন আমার মুখটা এত বিশ্রী! শরীরটাই বা এত জঘন্য কেন? কেন আমার প্রতি এই ব্যভিচার?

মাঝেমধ্যে আমার নিজেকে শেষ করে ফেলতে ইচ্ছে হয়, হাস্যকর শোনালেও এটাই নিষ্কপট সত্য। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের অন্তর্দৃষ্টি  দিয়ে নিজেকে দেখার চেষ্টা করেছি বারকয়েক, সেসবই দিনের শেষে অর্থহীন মনে হয়েছে । নিজের মুখটার উপর হাত বুলিয়েছি, আয়নার উপর হাত বুলিয়েছি, নিজেকে ওঁচলা মনে হয়েছে প্রতিবার।

আমার চেহারা আমায় বাইরে যাওয়া থেকে বিরত রাখে, আত্মীয়তা, বন্ধুত্ব রক্ষা করা, সব কিছু ক্যামন মূল্যহীন মনে হয়।

রাস্তা দিয়ে হাঁটলে অনেক গুলো সমব্যথী চোখ সহানুভূতিশীল দৃষ্টিতে আমার পানে চেয়ে থাকে, আমি কারও সমবেদনা চাইনা, তারা তো আমায় সাধারণ ভাবতে পারে! কিংবা অনুভূতিহীন আচরণ করতে পারে!

ঈশ্বর এই পৃথীবির সবচেয়ে বড় পাপী, সে নিজে সুন্দর আর তার সৃষ্টিদের ব্যক্তিবিশেষে অত্যাধিক আনুকূল্য প্রদর্শন করেন, তিনি পক্ষপাতিত্ব করেন।

মানুষ মিথ্যে বলে, মানুষের মন বলে কিছু নেই, সবই বাহ্যিক সৌন্দর্য, সুন্দরের জয়ধ্বনি সকলে করে, আর এভাবেই কুৎসিৎরা নিভৃতে কাঁদে।

সতেরো বছর বয়স আমার আর এটা সতেরোতম ছবি, কী অদ্ভুতভাবে সংখ্যাতত্ত্ব মিলে গিয়েছে... এই তো ডিলিট বাটন... মুছে ফেলি... মুছে দিই এই ছবি... কেউ লিখবেনা তুমি কুৎসিত, কেউ লিখতে পারবেনা তুমি কুৎসিত! কুদর্শন! বিশ্রী! কুরূপ! অসুন্দর! কদর্য.....

7 Feb
Sudip Sen