ফেচির বরকে সামনে দেখলেই ক্যালাতে ইচ্ছে করে। শালা দেখতে রোগা প্যাটকা হলেও রস কম নয়। এই কদিন আগেই একটা ছেলে পয়দা করল, সেই ছেলের জামাকাপড় জুটতে না জুটতেই বৌয়ের পেট ফুলে ঢোল। আবে, খেতে দিতে নাই পারবি তো বিয়ে করলি ক্যানো? নিজের হাত টা তো আছে, নাকি!
বৌয়ের পরিবর্তে হাত ব্যবহার করতে পারিস তো.....

কাল সরস্বতীপূজার বিসর্জন ছিল। বেশ ধুমধাম করে জেবিএল বাজছে, লেজার লাইট লাগানো হয়েছে। সেই লাল নীল আলোর ছটাতে যে গান বাজছিল বোঝা কঠিন, তবে লোকের মুখে প্রচলিত লিরিক অনুযায়ী এই গানের নাম 'দিদিমা বলেছে তোর ধোনে পোকা'।

প্রত্যেক পূজা মন্ডপের পিছনদিকটাতে একটা আলাদা গুমটিঘর করা হয়, সেখান থেকে গান বাজানো হয় আর প্রতিরাতে রাম খাওয়া হয়, ছোলা ভাজা কাঁচা পেয়াজ আর লঙ্কা কুচিয়ে। কখনও সখনও বিটনুন ছিটিয়ে দেওয়া হয়, রামের সাথে নোনতাস্বাদের ভাল কম্বিনেশন।

পূজানুষ্ঠান নিমিত্তমাত্র, আসল উদ্দেশ্য নিশ্চিন্তভাবে মদ খাওয়া। মদ খেলে একরকম রাজারাজা ভাব আসে, মনে হয় আমিই পৃথিবীর অধিপতি; আমার কথাতে সূর্যোদয় হয়, চন্দ্রগ্রহণ ঘটে।

ফেচির ছেলেটা খালি গায়ে মন্ডপের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে, লেজার লাইটের ছটা হাতে করে ধরবার চেষ্টা করছে। যেই ধরতে যাচ্ছে অমনি লাইটের আলো হাতের মুঠোর বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে, পারছেনা...  আলো ধরতে পারছেনা... জীবনের আলো সকলে ধরতে পারেনা।

এই হাল্কা ঠান্ডাতে ঘটি গরম দারুণ জমে, বিশেষ করে রামের সাথে। পাঁচটা ঘটি গরম অর্ডার দেওয়া হল। ফেচির ছেলেটা তাকিয়ে ছিল... শালা দৃষ্টিতেই অর্ধেক ঘটি গরম মেরে দিল! পকেট হাতরে কোনও খুচরো পয়সা পাওয়া গেল না। দুটো একশ টাকার নোট পড়ে আছে। না, ওকে একটা দেওয়া গেল না।

শালা, নিশ্চয় লোভ দেখিয়েছিল, নেওয়ার সময় একটা ঘটি গরম হাত থেকে পড়ে গেল। খুব গালাগাল দিলাম মনেমনে। আড়াই বছরের এই খালি গায়ে থাকা ছেলেটা বড় হলে নিশ্চয়ই ডাকাত হবে।

জেবিএল এ সমানে একই গান রিপিটেডলি বাজছে, 'ধনে পোকা'। ফেচির ছেলেটা আর আলো ধরছে না।
ঘটি গরম পালিয়ে গিয়েছে।

হঠাত্ কান্নার আওয়াজ কানে এল। ফেচির ছেলে কান্না করছে, ও কুড়িয়ে কুড়িয়ে ঘটি গরম খাচ্ছিল। ফেচি ওখান থেকে টেনে নিতেই কান্না জুড়েছে, যতক্ষণ না সবটা শেষ করছে ততক্ষণ সরবেনা, ভাব দেখে এমনই মনে হচ্ছে। ফেচির ছেলের এই জেদ দেখে সবাই হেসে লুটিয়ে পড়ছে.....।

আমাদের হাইস্কুলে আগে ফুটবল নক আউট হত। একদিন দুপুরবেলাতে খেলা দেখতে গিয়ে আমার খুব বাদাম খেতে ইচ্ছে হয়েছিল, কিন্তু পকেটে কোনও টাকা ছিল না। সেদিনও কারও বাদাম পড়ে গিয়েছিল, আমি কুড়িয়ে খেয়েছিলাম.....  সবাই এমনভাবেই হেসেছিল। কেউ বুঝতে চায়নি... আমার আত্মা কতটা একনিষ্ঠতার সাথে সেই বাদাম প্রার্থনা করেছিল, কেউ বুঝতে চায়নি.... কেউ না....

Sudip Sen
Sixteen Feb Sixteen