কর্ড লাইন......
নীলাভ সবুজ শ্যাওলা ছাওয়া শীতল উঠোনটা পেরিয়ে যেদিন চৌরাস্তার চারতলা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অফিসে উঠলাম, বুঝতে পেরেছিলাম আমার ক্লাস নাইনের ডায়েরিটা হারিয়ে গিয়েছে। হারিয়েছে বয়ঃসন্ধির আবেগ, অনুভূতি। ডায়েরির মাঝে রাখা ছিল লাল গোলাপ। না না! কেউ দেয়নি। নিজেই জমিয়ে রাখতাম। গোলাপের আভা ডায়েরির পাতাই ফিকে বেগুনি রং নিয়েছিল। হারিয়ে গেল!
দুঃখ পেয়েছিলাম।
যখন তোর ডালমুট আর দইফুচকা খাওয়ার ইচ্ছা জাগে, পকেট হাতড়ে দেখিস যা খুচরো পড়ে আছে তা শেষ করলে ট্রামের টিকিট কাটা যাবে না। নোট ভাঙানো অসম্ভব, সামনের ভ্যালেন্টাইনস ডেতে 'ওকে' কিছু গিফট দিতে হবে যে।
ভাই! ইচ্ছার সঙ্গে আর কত আপস করবি বল তো?
একদিন 'ওকে' কিছু দেওয়ার কথা ভাবতে টাকা জমাতে হবে না, সেদিন দেখিস অ্যাসিডিটির ভয়ে ডালমুট দইফুচকা সব ভুলে যাবি।আমদের জীবনটাই এমন......
'যা চেয়েছি কেন তা পাইনা'।
আমার অফিসের ম্যাডাম আমায় খুব ভালবাসে। প্রথমে টেবিলে বসায়, তার পর কলারের বোতাম খোলে। কাছে টেনে নেয়। আমার চুলে হাত চালায়। ঘামের দুর্গন্ধ নেয়। গাল টেনে প্রেমের দাগ বসায়। তার পর যখন জড়িয়ে ধরে, আমি জিজ্ঞেস করি...
- ম্যাডাম, আমার প্রোমোশনের কিছু ভাবলেন?
ম্যাডাম আমার গালে ঠাটিয়ে এক থাপ্পড় মারে। প্রেমের দাগে পাঁচ আঙুলের ছাপ!
কখন কী বলতে হয় আমি জানি না। জানি না কখন কী করতে হয়! তাড়াতাড়ি জামাকাপড় গুছিয়ে আমি ওয়াশরুমে যাই। আয়নার সামনে দাঁড়াই। এই কি সেই আমি?
যে এক সময় কাউকে ভালবাসত, গ্রিটিংস কার্ডে লিখেছিল.....
তিমিলাই মো মায়া গারচু.....
গ্রিটিংস কার্ড বাড়িতে ফেরৎ এসেছিল। আসলে বড় অবুঝ এ মন। স্থান,কাল,পাত্র মানে না। দিগন্ত ছুঁতে চায়। ছুঁতে চায় আকাশ। 'ভালবাসি' বললে হঠাৎ লাফিয়ে উঠতাম, আকাশে মুঠি চালাতাম। মনে হত যেন আমেরিকা আবিষ্কার করেছি। কিছু ক্ষণ পর জিজ্ঞেস করত......
- আমি কি তোমায় ভালবাসি?
- হুমম।
- না বোধ হয়।
আমি মুঠি খুলে দিতাম। আকাশে বাতাসে নিজেকে মুক্ত করতাম।
ভালবাসায় মুক্তি নেই, মুক্তিতেই আছে ভালবাসা।
আমার অফিসের ম্যাডাম আমায় খুব ভালবাসে। ডিনারে নিয়ে যায়, আমরা একসঙ্গে ড্রিংক করি। মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়ি.. উনি সিগারেট ঠোঁটে নেন, আমি লাইটার জ্বালিয়ে দিই। ম্যাডাম আমার ঘাড়ে পা তুলে দেন।
আমি পা টিপতে থাকি। ম্যাডামের পায়ের ভারে আমার ঘাড় টলমল করে। ভয় হয়। পড়ে গেলেই হয়তো আমার চেয়ার ছেড়ে উঠতে হবে। ভয় লাগে, এয়ারকন্ডিশনের অভ্যাস ছাড়তে। সবাই জানে আমার ভাল চাকরি, কাঁচের গাড়িতে যাতায়াত। এই স্টেটাস টা মেনটেন করতে হবে। আমি সযত্নে ম্যাডামের পা টিপতে থাকি, ম্যাডাম হাত বাড়িয়ে দেয়...তার পর আরও কিছু..................
এক সময় সত্যিই ভাবতাম কেউ আমার দিকে তার পা বাড়িয়ে দিক। আমি তার নখে নেল পলিশ লাগাই। ইচ্ছে হতো পায়ের পাতায় কবিতার লাইন লিখতে।
ভালবাসি.....ভালবাসি......
ম্যাডামের পার্টি শেষ হল। আমি ওঁর টালমাটাল শরীরটাকে সামলে গাড়িতে উঠিয়ে ড্রাইভারকে বাড়ির দিকে যেতে নির্দেশ দিলাম। ম্যাডামকে নিয়ে ওঁর ঘরে ঢুকলাম, এ ঘর অনেক চেনা। সেই পরিচিত গন্ধ নাকে আসছে। অনেক রাত হয়েছে, এবার আমার বাড়ি ফেরা দরকার। ম্যাডাম আমার গাল টানলেন। প্রেমের দাগ বসিয়ে বললেন সঠিক সময়ে অফিস এসো।
রাত্রে আর বাস পাওয়া যায়নি। হেঁটে হেঁটে স্টেশনে পৌঁছলাম। রাতের শেষ ট্রেন ছিল মাতৃভূমি প্যাসেঞ্জার । চায়ের দোকানদার ঝাঁপ নামাতে নামাতে বললেন, মাতৃভূমি চলে গিয়েছে। আমি স্টেশনে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।
......আর ভাবছিলাম মাতৃভূমি প্রথম প্রেমিকা নিয়ে অনেক আগেই মনের কর্ড লাইনে যাত্রা করেছে।
নীলাভ সবুজ শ্যাওলা ছাওয়া শীতল উঠোনটা পেরিয়ে যেদিন চৌরাস্তার চারতলা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অফিসে উঠলাম, বুঝতে পেরেছিলাম আমার ক্লাস নাইনের ডায়েরিটা হারিয়ে গিয়েছে। হারিয়েছে বয়ঃসন্ধির আবেগ, অনুভূতি। ডায়েরির মাঝে রাখা ছিল লাল গোলাপ। না না! কেউ দেয়নি। নিজেই জমিয়ে রাখতাম। গোলাপের আভা ডায়েরির পাতাই ফিকে বেগুনি রং নিয়েছিল। হারিয়ে গেল!
দুঃখ পেয়েছিলাম।
যখন তোর ডালমুট আর দইফুচকা খাওয়ার ইচ্ছা জাগে, পকেট হাতড়ে দেখিস যা খুচরো পড়ে আছে তা শেষ করলে ট্রামের টিকিট কাটা যাবে না। নোট ভাঙানো অসম্ভব, সামনের ভ্যালেন্টাইনস ডেতে 'ওকে' কিছু গিফট দিতে হবে যে।
ভাই! ইচ্ছার সঙ্গে আর কত আপস করবি বল তো?
একদিন 'ওকে' কিছু দেওয়ার কথা ভাবতে টাকা জমাতে হবে না, সেদিন দেখিস অ্যাসিডিটির ভয়ে ডালমুট দইফুচকা সব ভুলে যাবি।আমদের জীবনটাই এমন......
'যা চেয়েছি কেন তা পাইনা'।
আমার অফিসের ম্যাডাম আমায় খুব ভালবাসে। প্রথমে টেবিলে বসায়, তার পর কলারের বোতাম খোলে। কাছে টেনে নেয়। আমার চুলে হাত চালায়। ঘামের দুর্গন্ধ নেয়। গাল টেনে প্রেমের দাগ বসায়। তার পর যখন জড়িয়ে ধরে, আমি জিজ্ঞেস করি...
- ম্যাডাম, আমার প্রোমোশনের কিছু ভাবলেন?
ম্যাডাম আমার গালে ঠাটিয়ে এক থাপ্পড় মারে। প্রেমের দাগে পাঁচ আঙুলের ছাপ!
কখন কী বলতে হয় আমি জানি না। জানি না কখন কী করতে হয়! তাড়াতাড়ি জামাকাপড় গুছিয়ে আমি ওয়াশরুমে যাই। আয়নার সামনে দাঁড়াই। এই কি সেই আমি?
যে এক সময় কাউকে ভালবাসত, গ্রিটিংস কার্ডে লিখেছিল.....
তিমিলাই মো মায়া গারচু.....
গ্রিটিংস কার্ড বাড়িতে ফেরৎ এসেছিল। আসলে বড় অবুঝ এ মন। স্থান,কাল,পাত্র মানে না। দিগন্ত ছুঁতে চায়। ছুঁতে চায় আকাশ। 'ভালবাসি' বললে হঠাৎ লাফিয়ে উঠতাম, আকাশে মুঠি চালাতাম। মনে হত যেন আমেরিকা আবিষ্কার করেছি। কিছু ক্ষণ পর জিজ্ঞেস করত......
- আমি কি তোমায় ভালবাসি?
- হুমম।
- না বোধ হয়।
আমি মুঠি খুলে দিতাম। আকাশে বাতাসে নিজেকে মুক্ত করতাম।
ভালবাসায় মুক্তি নেই, মুক্তিতেই আছে ভালবাসা।
আমার অফিসের ম্যাডাম আমায় খুব ভালবাসে। ডিনারে নিয়ে যায়, আমরা একসঙ্গে ড্রিংক করি। মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়ি.. উনি সিগারেট ঠোঁটে নেন, আমি লাইটার জ্বালিয়ে দিই। ম্যাডাম আমার ঘাড়ে পা তুলে দেন।
আমি পা টিপতে থাকি। ম্যাডামের পায়ের ভারে আমার ঘাড় টলমল করে। ভয় হয়। পড়ে গেলেই হয়তো আমার চেয়ার ছেড়ে উঠতে হবে। ভয় লাগে, এয়ারকন্ডিশনের অভ্যাস ছাড়তে। সবাই জানে আমার ভাল চাকরি, কাঁচের গাড়িতে যাতায়াত। এই স্টেটাস টা মেনটেন করতে হবে। আমি সযত্নে ম্যাডামের পা টিপতে থাকি, ম্যাডাম হাত বাড়িয়ে দেয়...তার পর আরও কিছু..................
এক সময় সত্যিই ভাবতাম কেউ আমার দিকে তার পা বাড়িয়ে দিক। আমি তার নখে নেল পলিশ লাগাই। ইচ্ছে হতো পায়ের পাতায় কবিতার লাইন লিখতে।
ভালবাসি.....ভালবাসি......
ম্যাডামের পার্টি শেষ হল। আমি ওঁর টালমাটাল শরীরটাকে সামলে গাড়িতে উঠিয়ে ড্রাইভারকে বাড়ির দিকে যেতে নির্দেশ দিলাম। ম্যাডামকে নিয়ে ওঁর ঘরে ঢুকলাম, এ ঘর অনেক চেনা। সেই পরিচিত গন্ধ নাকে আসছে। অনেক রাত হয়েছে, এবার আমার বাড়ি ফেরা দরকার। ম্যাডাম আমার গাল টানলেন। প্রেমের দাগ বসিয়ে বললেন সঠিক সময়ে অফিস এসো।
রাত্রে আর বাস পাওয়া যায়নি। হেঁটে হেঁটে স্টেশনে পৌঁছলাম। রাতের শেষ ট্রেন ছিল মাতৃভূমি প্যাসেঞ্জার । চায়ের দোকানদার ঝাঁপ নামাতে নামাতে বললেন, মাতৃভূমি চলে গিয়েছে। আমি স্টেশনে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।
......আর ভাবছিলাম মাতৃভূমি প্রথম প্রেমিকা নিয়ে অনেক আগেই মনের কর্ড লাইনে যাত্রা করেছে।
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন