আমার গায়ের রঙ বেশ ফরসা, কিন্তু হাতটা কিছুটা কালো... আমাকে কোনও মেয়ে পছন্দ করেনা তার একটা বড় কারণ হতে পারে আমার কালো হাত... একদিন সন্ধ্যাবেলাতে আমি স্টেশনের পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছি, হঠাত দেখি একদল বিক্ষুব্ধ লোক মিছিল করতে করতে আমার দিকে এগিয়ে আসছে, তারা সকলে বলছে কালো হাত ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও....
আমি তো কোনও অপরাধ করিনি! তবু ওরা আমার হাত ভেঙে গুড়িয়ে দেবে কেন?
আজ তরুণের ছেলে হবে। হবে না, হতে পারে। তরুণ এক টাকার কয়েন নিয়ে টস করেছে... হেড মানে ছেলে টেল মানে মেয়ে। হেড পড়েছিল। তাই তরুণ একরকম নিশ্চিত যে আজ ওর ছেলেই হবে। তরুণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে দেড় হাজার টাকা দাদন নিয়ে এসেছে, তিনটে মেয়ের পর একটা ছেলে হলে পাড়ার সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবে। গনেশ ময়রার দোকানে খুব বেশি মিষ্টি পাওয়া যায়না, তরুণ বলে রেখেছে ছেলে হলে তিনশো পিস রসগোল্লা নেবে। তরুণের বৌয়ের পেট টা ফুলে পাতনার মত হয়ে গিয়েছিল, শিখার মা ডেকে বলেছিল ছেলেই হবে।
তরুণ এট্টু-আড্ডু মদ খায়। মদ খেয়ে মাঝেমধ্যে বৌকে 'বুন' বলে ডাকে। তরুণের বৌ লজ্জা পায়। তরুণ যখন সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে বৌ মদ খেতে বারণ করে, কঠোর নিয়ম চালু করে মদ খেলে রাতের বেলাতে পাশে 'শুয়া' নিষেধ।
তরুণের যখন তৃতীয় মেয়ে হয়, খুব কেঁদেছিল। ভেবেছিল ছেলে হবে, কিন্তু হয়নি। মেয়ের নাম রেখেছিল সোনিয়া, সোনিয়া নামটা কিছুটা হিন্দি বই এর নায়িকাদের মত। আদতে সোনিয়া খুবই কালো, ওর বৌয়ের মত।
তরুণ বর্ষাকালে বাড়িতে গাছপূজো করে। মামনসার কাছে ছেলে হওয়ার প্রার্থনা করেছে, আগের বারও করেছিল, কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি।
তরুণ স্বপ্ন দেখছে ছেলেকে হাত ধরে নিয়ে মনসা তলায় পাঁঠাবলি করতে গিয়েছে। ছেলে তরুণকে বাবা বলে ডাকছেনা, তরুণ বলে ডাকছে। তবু তরুণের আনন্দ হচ্ছে, ছেলেকে কাঁধে চাপিয়ে পাঁঠাবলি দেখছে তরুণ।
রূপার মা খবর দিল আবার তরুণের মেয়ে হয়েছে। খুব ঘুম এসে গিয়েছে। তরুণের চোখ বুজে আসছে ঘুমে।