একটা সময় বড় গরীব ছিলাম আমরা। বাড়িতে বেশিরভাগ দিন সজনেডাটা দিয়ে মুসুর ডাল রান্না হত, মাঝেমধ্যে কচু আর কুমড়ো দিয়ে পুঁইশাক। যখন একই রান্না রোজরোজ চলত, মা দুপুরে ডিম ভেজে দিত, মনে হত অমৃত খাচ্ছি।
বাজারের বেশিরভাগ দ্রব্যের পরিমাণ ছিল একশো অথবা পঞ্চাশ, যেমন পঞ্চাশ তেল, পঞ্চাশ চিনি, একশো মুড়ি অথবা একশো মুসুরির ডাল। সমস্যাটা অন্য জাগায়, যেদিন মা চাল আনতে দিত, দোকানে ভুলে একশো বা পঞ্চাশ চাইতাম। তখন সবাই হাসত আমার দিকে চেয়ে। যে ডাটা আমরা খেতাম সেটাকে বলা হতো আলমপুরের ডাটা, মা বলত আলমপুরের ডাটা না পাওয়া গেলে কাটোয়ার ডাটা আনতে। আমি দোকানে চাইতেই, দোকানদার হেসে আমায় বলত নবদ্বীপের ডাটা আছে, নেবে? আমি হতচকিত হয়ে বলতাম, মা যা বলেছে তাই, অন্যকিছু নিলে বিপদ আছে।
সাধারণত গরীবলোকের আত্মীয়তা গরীবের সাথেই হয়। আমার এক দাদু ছিল, দীপক পাল। বাজারে ছাট ফল বিক্রি করত, পচা কলা, আপেল অথবা বেদানা। টুনি মাসি খাওয়ার জন্য বড় খিজি করত, এই সন্ধ্যার জল দেওয়া ভাতের সাথে যদি একটা কাঁচা পেয়াজ, কাঁচা লঙ্কা আর চপ হয়, পুরো জমে যেত। মনে আছে, একদিন টুনি মাসি ভাত খেতে বসে চপ চেয়েছিল। দীপক দাদু নিজের দুর্বলতা ঢাকতে তাড়া দেয়নি, বলেছিল শুধুশুধু নুন দিয়ে খা, আর ভাব তুই চপ দিয়ে ভিজাভাত খাচ্ছিস। রাতের অন্ধকারে টুনিমাসি আমায় পচা আপেল দিত, আমিও কামড় দিতাম কিছু না ভেবেই। হয়তো আপেলের সাথে পোকাও খেয়েছি বার কয়েক, তাতে আর কী আসে যায়! সেই উৎফুল্লতা মিশ্রিত স্বাদ এখন আর পাইনা।
জীবন জীবনের নিয়মে চলে। আগে ছবি তুললে হয় চোখ বুজে থাকত অথবা দাঁতকপাটি বেরিয়ে। মনে আছে টিউশনের স্যার একদিন জামা কেচে পড়তে যেতে বলেছিল, জামার কালসিটে দাগ এতটাই প্রকট হয়েছিল!
সময় কত কী শেখায়!
বাছাই করা লোকের সাথে মিশতে হয়, ভেবেচিন্তে কথা বলতে হয়। এসব সত্ত্বেও কাওকে যদি পাই, যে এলোমেলো কথা বলে, কথা বলতে গেলে দেখেনা আমার কতটা দাঁত বেরোল, অথবা ছবি তুললে চোখটা কতটা বুজল। আমি যেমন, আমি যা, তাই তার ভাল লাগে। নিজেকে কোনওসময় নিজের সাথে ছলচাতুরী করতে হয়না, পরতে হয়না 'স্মার্টনেসের চাদর'। কিন্তু আজকের দিনে সেসব মানুষ কোথায় পাই?
এই কারণেই যেকোনও রকমের সম্পর্কের থেকে মা, বাবা, আর নিজের ভাই এর স্নেহ ভালোবাসা অনেক দামি, তাদের কাছে আগেও যেমন ছিলাম, আজও তেমন আছি, কালও তেমন থাকব যেকোনও পরিস্থিতিতেই।
বাজারের বেশিরভাগ দ্রব্যের পরিমাণ ছিল একশো অথবা পঞ্চাশ, যেমন পঞ্চাশ তেল, পঞ্চাশ চিনি, একশো মুড়ি অথবা একশো মুসুরির ডাল। সমস্যাটা অন্য জাগায়, যেদিন মা চাল আনতে দিত, দোকানে ভুলে একশো বা পঞ্চাশ চাইতাম। তখন সবাই হাসত আমার দিকে চেয়ে। যে ডাটা আমরা খেতাম সেটাকে বলা হতো আলমপুরের ডাটা, মা বলত আলমপুরের ডাটা না পাওয়া গেলে কাটোয়ার ডাটা আনতে। আমি দোকানে চাইতেই, দোকানদার হেসে আমায় বলত নবদ্বীপের ডাটা আছে, নেবে? আমি হতচকিত হয়ে বলতাম, মা যা বলেছে তাই, অন্যকিছু নিলে বিপদ আছে।
সাধারণত গরীবলোকের আত্মীয়তা গরীবের সাথেই হয়। আমার এক দাদু ছিল, দীপক পাল। বাজারে ছাট ফল বিক্রি করত, পচা কলা, আপেল অথবা বেদানা। টুনি মাসি খাওয়ার জন্য বড় খিজি করত, এই সন্ধ্যার জল দেওয়া ভাতের সাথে যদি একটা কাঁচা পেয়াজ, কাঁচা লঙ্কা আর চপ হয়, পুরো জমে যেত। মনে আছে, একদিন টুনি মাসি ভাত খেতে বসে চপ চেয়েছিল। দীপক দাদু নিজের দুর্বলতা ঢাকতে তাড়া দেয়নি, বলেছিল শুধুশুধু নুন দিয়ে খা, আর ভাব তুই চপ দিয়ে ভিজাভাত খাচ্ছিস। রাতের অন্ধকারে টুনিমাসি আমায় পচা আপেল দিত, আমিও কামড় দিতাম কিছু না ভেবেই। হয়তো আপেলের সাথে পোকাও খেয়েছি বার কয়েক, তাতে আর কী আসে যায়! সেই উৎফুল্লতা মিশ্রিত স্বাদ এখন আর পাইনা।
জীবন জীবনের নিয়মে চলে। আগে ছবি তুললে হয় চোখ বুজে থাকত অথবা দাঁতকপাটি বেরিয়ে। মনে আছে টিউশনের স্যার একদিন জামা কেচে পড়তে যেতে বলেছিল, জামার কালসিটে দাগ এতটাই প্রকট হয়েছিল!
সময় কত কী শেখায়!
বাছাই করা লোকের সাথে মিশতে হয়, ভেবেচিন্তে কথা বলতে হয়। এসব সত্ত্বেও কাওকে যদি পাই, যে এলোমেলো কথা বলে, কথা বলতে গেলে দেখেনা আমার কতটা দাঁত বেরোল, অথবা ছবি তুললে চোখটা কতটা বুজল। আমি যেমন, আমি যা, তাই তার ভাল লাগে। নিজেকে কোনওসময় নিজের সাথে ছলচাতুরী করতে হয়না, পরতে হয়না 'স্মার্টনেসের চাদর'। কিন্তু আজকের দিনে সেসব মানুষ কোথায় পাই?
এই কারণেই যেকোনও রকমের সম্পর্কের থেকে মা, বাবা, আর নিজের ভাই এর স্নেহ ভালোবাসা অনেক দামি, তাদের কাছে আগেও যেমন ছিলাম, আজও তেমন আছি, কালও তেমন থাকব যেকোনও পরিস্থিতিতেই।
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন