তিমিলাই গারচু জাপানে থাকে। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হলেও আমরা নিয়মিত স্কাইপে কথা বলি। জাপানি ভাষাটা আমি মোটেই জানিনা, তবে গুগল ট্রান্সলেটরের সাহাহ্য নিয়ে বেশ কিছুটা রপ্ত করতে পেরেছি... একটা মেয়েকে ইম্প্রেশ করতে গিয়ে বিদেশী ভাষা শিখে যাব, এতো আমার কল্পনাতীত ছিল।
তিমিলাই একা থাকতে খুব পছন্দ করে। কোনও শব্দ দিয়ে নিজের আক্ষেপ বহিঃপ্রকাশ না করলেও আমি বুঝে গিয়েছি... শহুরে সভ্যতা ওর মোটেই পছন্দ নয়...। তাই, মাঝেমধ্যে গঙ্গার ধারে বেড়াতে বেড়াতে বলেছি....
これは川であります,
私はボートに乗るのが大好き,
私と一緒に参加し、来ます....
এই ফাটা গলা নিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছি, মাঝিমাল্লার ভাটিয়ালি গানের সঙ্গে দাঁড় টেনে নৌকা চালানোর ভিডিও পাঠিয়েছি....।
তিমিলাই এর প্রায় সমস্ত বন্ধু আমায় চেনে... মাঝেমধ্যে তাদের সাথেও আমার কথা হয়... ওরা আমাদের মত বন্ধুত্বের ক্যাটাগরাইজড করে না, যে শ্রেণীর এক অস্থায়ী এবং বিপন্ন প্রজাতি 'ফেসবুক ফ্রেন্ড.'...।
আমিও মদনকে একদিন গারচুর সম্পর্কে বললাম... নাম শুনে লজ্জাতে লাল হয়ে গেল মদন... বলল বাড়ি গিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ অভ্যাস করতে... ব্যাপারটা খুব কঠিন বুঝে আমি আর কাউকে কিচ্ছুটি বলিনি....
সাধারণত বিকেলে আমাদের কথা হয়... আমি খোলা মাঠের নীচে বসি... যার অনতিদূরে দিগন্তরেখা সবুজ ঘাসকে স্পর্শ করেছে... আর কাছের গাছ গুলোতে গরু বাঁধা থাকে... মাঝেমধ্যে হাম্বা হাম্বা করে ডাকে... এইতো সেদিন... গরু সম্পর্কে একটা সম্পূর্ণ ধারণা দিলাম তিমিলাইকে... গরুর মূত্র থেকে গোবর... কোনওটাই যে ফেলার নয়... পুনর্নবীকরণ শক্তি...।
তিমিলাই খুব কম কথা বলে... ওর সেই এক টপিক... সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং... আমার তো কত টপিক... প্রেম, ভালোবাসা, দুঃখ, বেদনা, রাজ্য, দেশ, গণতন্ত্র, স্বৈরচার, ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমেরিকা, কিউবা, মুসোলিনি, তুর্কি, ভারত, পশ্চিমবঙ্গ...।
আজ এই কিছুক্ষণ আগে আমরা কথা শেষ করলাম, বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটা কীভাবে পরিচালনা করা হয়....লেজিসলেটিভ, এক্সিকিউটিভ আর জুডিশিয়াল্ সিস্টেমের উপর ধারণা দেওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্কে জানতে চায়লো... আমি কী বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না... তারপর চট করে মাথায় একটা বুদ্ধি এসে গেল... বললাম এখানকার সব উত্তর জনগণ দেয়, ইলেকশনের রেজাল্টে... ইভেন রেপ টেপ, ঘুষ টুষ... সবকিছুর ওই একই উত্তর...।
Sudip Sen
25/03
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন