না, আমার কিচ্ছু চাইনা। জুতো, জামা স্যান্ডোগেঞ্জি, পারফিউম, ফুচকা, ডিএসএলআর, মোবাইল, ল্যাপটপ অথবা আনলিমিটেড থ্রিজি। কিচ্ছু না।

আমি প্রাণভরে বাঁচতে চাই। খোলা আকাশের নীচে মুক্ত শ্বাস নিতে চাই।

অন্ধকারে মদ্দপ বাইক আরোহীকে দেখেছিলাম আমি।দেখেছিলাম তার বেপরোয়া মনোভাব। কোনও বাঁধাই যেন সে মানে না।

ওপ্রান্ত থেকে দশচাকার লড়ি আসছিল। ক্রমাগত হর্ণের সতর্কবাণী... শুনেছিলাম মৃত্যুর সাইরেন।

তীব্রতর গতিতে পরস্পরের ধাক্কা। চোখের সামনে জীবন্ত মৃত্যু। রাস্তার কুকুরটাও সেই মুহূর্তে চোখ সরিয়ে নিয়েছিল। গোটা রাস্তাই রক্তের বন্যা।

ডেডবডি নিয়ে যাওয়ার পর অনেক কিছু পড়েছিল। একটা আঙুল, চোখের অংশ বিশেষ, আর বাঁহাতের ঘড়িটা.... যেটা জীবনের শেষ ভ্যালেন্টাইন ডে'তে একটা পাগলি উপহার দিয়েছিল।

মোবাইলের ডিসপ্লেটা তখনও জ্বলছে আর নিবছে, নিরাপদে সে বেঁচেছিল, বেঁচেছিল ওয়ালপেপারের মেয়েটাও।

- হ্যালো! কে! জাহ্নবী? প্রিয়াংশুকে চেনেন? এইমাত্র একটা স্ট্রিট অ্যাকসিডেন্টে তার মৃত্যু হয়েছে।

ওপারের কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছিল না।

আমি দেখেছিলাম কয়েকটা বাবার কান্না। কয়েকজন মায়ের চোখের জল। আর পরিচিত আত্মীয়পরিজনের হাহাকার।

যেকোনো মৃত্যুই অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু চোখের সামনের এই মৃত্যুগুলো আরও ভয়ঙ্কর। শেষবারের বাঁচার চেষ্টাই ছটফট করা, অথবা চায়ের কাপ থেকে মুখে শেষবারের মত জল ঢেলে দেওয়া।

মৃত্যু আমাদের অনেক কিছু শেখাই। মানসিক ভোগবাসনা, লোভ লালসা, আসক্তি আর আকাঙ্ক্ষা। কোনওকিছুই তখন আর বড় না।

আমি জাস্ট বাঁচতে চাই। আমি আরেকবার বাঁচতে চাই।

Sudip Sen
5 Dec 15