আমার এক গার্লফ্রেন্ড আছে বুঝলি, মানে একজন-ই।যদিও আমি ওর বয়ফ্রেন্ড নই। এই আজকাল লোকজনে আমার লেখার প্রশংসা করছে এসব ওর জন্য। শুরুতে শুধু ওকে নিয়ে লিখতাম, যদি কখনও মাথায় রোদ লাগবে বলে ছাতার নীচে নিত, আমি ওই ছাতা নিয়ে তিনশো শব্দের গল্প লিখে ফেলতাম। কখনও ট্রেন থেকে হাত নাড়ালে আমি ট্রেন নিয়ে রচনা লিখতাম। সেই অর্থে যখন কেউ জিজ্ঞেস করে এত ভাবনা আসে কী থেকে? আমি নিঃসঙ্কোচে বলে দিই 'আমার গার্লফ্রেন্ড'। আমার প্রেম প্রতীষ্ঠা করার মাধ্যম গুলো ছোট ছোট। ওকে চকলেট গিফট করলে  হোয়াট্সঅ্যাপে চকলেট মাখা হাতের ছবি দিয়ে লেখে 'খেলাম'। কখনও যদি ওর ভয়েস শুনিস না! পাগল হয়ে যাবি, যেমন আমি হয়েছি। ওর এত গুণ! বলে বোঝাতে পারব না। ওর সিম্পলিসিটি, ইনোসেন্স, অনেস্টি এটুকুই যথেষ্ট আমার লেখার ভাবনা পেতে। আমি কিছুতেই ওকে ইম্প্রেশ করতে পারি না! :(
যখন আমাদের ছোটখাটো ব্যাপারে ঝগড়া হয়, আমি দেবদাসের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়। সেই লেখা স্বয়ং শরৎবাবু পড়লে আমি নিশ্চিত,উনিও প্রশংসা করতেন। আমি ইমোশন কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারি না। এই নিয়ে ও অনেকবার বলেছে, বুঝিয়েছে। আমি ইমোশনাল ফুল। যদিও আমি সবকিছুতেই স্মাইলি পাঠাই, ও বলে 'My Smiley King'। মোটামোটি যা লেখা পড়িস সব কিছুর সাথেই ওর কানেকশন থাকে। একএকদিন রাত্রে ও আমার লেখা পড়ে শোনাই, আমার যে কেমন ফীল হয়, তোদের বলে বোঝাতে পারব না।

খুব ব্যক্তিগত হয়ে গেল তাই না! যাইহোক, এত কথা লেখার প্রয়োজন ছিল না। আজ ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার সময় এক কাকু চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলছিল এখনকার ছেলেমেয়েরা সেই অর্থে ভালবাসতে জানেনা,  সব প্রেম-ই 'দি তিনদিনের ইনফ্যাচুয়েশন'। ট্রেনের বাকি প্যাসেঞ্জার উনার সহযাত্রী, ডেইলি প্যাসেঞ্জার। উনারা মাথা নেড়ে সম্মতি জানাচ্ছিল। দেখ, ওদের সামনে অপরিচিত হয়ে এসব তো আর বলতে পারি না। তাই তোদের সামনেই বলে ফেললাম। আমিও এযুগের ছেলে,আমি এখনও ও যুগের মতই ভালবাসি। তোরা একটু প্রার্থনা করিস, আমরা যেন এরকমই......

বি:দ্র: গল্পের সাথে জীবিত কোন ব্যক্তির মিল খুঁজে পাওয়া গেলে তা নিতান্ত  কাকতালীয় বলে  বিবেচিত  হবে।