১.
ফোনে কথা বলতে বলতে একসময় মনে হল আমার খুব পেচ্ছাপ পেয়েছে... আমি পুকুরের ধারের জীর্ণ বাবলাগাছের গোঁড়াতে দাঁড়িয়ে নাভির নীচে হাল্কা চাপ দিলাম... তখনও ফোনে কথা বলছি.. একইসঙ্গে পুকুরের স্বাদু জলের সঙ্গে শরীরের নোনাপানির মিশ্রণ... হঠাত খেয়াল হল এই খিলখিল আওয়াজ কী ফোনের ওপাশে শোনা যাচ্ছে? তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কী কোনও ঝর্ণার জলের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছ?
২..
ততদিনে জেনে গেছি আমার বুদ্ধিশুদ্ধি কম... বয়সে ছোট... অপরিণত...। স্নাতকোত্তর পর্বে এসে আমি ক্লাস এইটের মত প্রেম করছি... রেস্তোরাঁর ভাবনা তখনও আসেনি, একবেলার স্ট্রিট ফুড ইক্যুয়াল টু একমাসের গ্রস ন্যাশনাল প্রোডাকশন... বাজেটের ঘাটতি না মেটাতেই বাড়ির রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নিয়ে জন্মদিনের গিফ্ট কিনলাম... ভাবলাম উপহারের প্যাকেটে কি লিখি... জন্মদিনে কী আর দেব তোমায় উপহার! বাংলায় নাও ভালোবাসা... না, সে হিন্দির থেকেও ইংলিশে ভাল....
৩...
আমি বোঝালাম... হ্যাঁ, আমি বোঝালাম এখনকার দিনে ভালোবাসা লিমিটেড এডিশনে পাওয়া যায়... তোমার প্রেম ট্রেম ফুরিয়ে গেলে আমার গুলো দিয়ে কাজ চালাব... তুমি তো বুড়ি হয়ে গেছ, আমি চ্যাংড়া... আমার মনে অফুরন্ত ভালোবাসার খনী রয়েছে...
জানো? তুমি কী জানো! একটা বয়সের পর আর কাউকে ভালবাসতে ইচ্ছে করেনা.. তখন শুধু মনে হয় কেউ আমায় ভালবাসুক... অনেক ভালবাসুক... এই পৃথিবীর সমস্ত খুচরো প্রেমিকদের থেকে বেশি ভালবাসুক... আমি.. শুনছো! আমিই সে... তোমার বুকটা কেঁপে উঠলো? কৈ! আমি তো কোনও আওয়াজ পাইনি....!
৪....
আমরা কথা বলিনা... ইয়েস আমরা কথা বলিনা... আমরা কথা বলবা না... ইয়েস আমরা আর কোনওদিন কথা বলব না... যদি কখনও বাজারে ইলিশ মাছ কিনতে গিয়ে সামনাসামনি ধাক্কা লাগে তবু কথা বলব না.... কখনও বিয়েবাড়ির ভোজে বিরিয়ানি বা ফ্রায়েড রাইস খাওয়ালেও তাকে মনে পড়বেনা... কোনওএকদিন রাত্রে বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরে গা পুড়ে গেলেও তাকে ডাকব না.... পঁচিশতম জন্মদিন আর কখনও আসবেনা... কখনও বলবনা পঁচিশবার বলো... 'আমি তোমায় ভালোবাসি.....।' তার চেয়ে বরং চলো.. এই রাতে সমস্ত ভালোবাসা সতর্কতার সঙ্গে উপেক্ষা করি... আর চোখ-কান-নাক সহ শরীরের সমস্ত ইন্দ্রিয় বন্ধ রেখে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি.... আমরা ঘুমিয়ে পড়ি....