ঘুম থেকে উঠেই দেখতাম সঞ্জীব ঝাঁটা দিয়ে উঠোন ঝাড় দিচ্ছে, তারপর পুরনো ভাঙাচোরা প্লাস্টিকের বালতিতে গোবরজল আর মাটি মিশিয়ে ন্যাতা দিয়ে গোল গোল করে নেপছে।
একটু বেলা হলে স্নান সেরে জামাকাপড় পরে বটি দিয়ে পেঁপেটা, মুলোটা, আলুটা কেটে সবজি রান্না করছে....।
ওর যে মা বাবা নেই...তা মোটেই বলা যাবেনা। এরকম দেখে আমি মাকে প্রায়শই জিজ্ঞেস করতাম.... ও এসব মেয়েদের কাজ করে কেন?
মা বলত ও মায়ের ভাল ছেলে...ওর নাম খোকন।
"খোকন খোকন করে মায়
খোকন গেছে কাদের নায়?
সাতটা কাকে দাঁড় বায়
খোকন রে তুই ঘরে আয়।"
বড় হওয়ার পর সঞ্জীবের প্রতি ভাবনার প্রভূত পরিবর্তন হয়। কেউকেউ মেয়েলি বলে ডাকে... তো কেউকেউ 'ম্যাগিমানুষ'। যখন ক্লাস টেন'এ উঠি... কে যেন বলেছিল মেয়েদের সাথে কথা বলার সময় সঞ্জীবের প্যান্ট ভিজে যায়। একদিন তো আমার সামনেই কেলেমামা বলল 'ভাই তুই যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ডি.কে রায় কে দ্যাখা।
সঞ্জীবের কাকার কলকাতা চায়ের দোকান। শনি-রবিবার বাড়িতে এলেই বৌদির পিছনপিছন বাজার করতে যায়... ম্যানম্যানে টাইপের... পাড়ার ছেলেরা সঞ্জীবের কাকাকে 'বৌদি' বলে ডাকত।
একটা সময় বিপদ বাধলো, সঞ্জীব নাকি এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার মেয়েটাকে পটিয়েছে। তখন বিবিসিতেও এই নিউজ টেলিকাস্ট হওয়ার উপক্রম... অলিতে গলিতে ফিসফিস " সঞ্জীব খাসা মাল পটিয়েছে.... সঞ্জীব খাসা মাল পটিয়েছে। "
মেয়াটা বয়সে বড় হলেও আমি যে এরকম একটা চান্স পেলে ছেড়ে দিতাম তা কখনো বলা যাবেনা...
রূপে সরস্বতী গুণে লক্ষ্মী... পাড়ার সবাই বোধহয় ভগবানকে হাত জোর করে প্রার্থনা করেছিল.....
'ভগবান! মেয়েলি সঞ্জীব এমন 'মাল' পেল...তাহলে আমরা কী দোষ করলাম? '
অত্যাশ্চর্য হয়ে গেলাম.... মেয়েটা নাকি সঞ্জীবকে জীবনে ভাল কিছু করে দ্যাখাতে বলেছে।
সঞ্জীব ন্যাড়ার সাথে কলকাতা গেলো ফ্যান সারায়ের কাজ শিখতে.... বিপত্তি তখনই বাঁধল। এমনিতেই ঠিকঠাক দেখতে পায়না, চশমা খুললে অন্ধ। ফ্যানের কয়েলে তামার তার জরাতে সে যে কী সমস্যা হত!.... ন্যাড়া আমায় বলত... আমি হাসতাম। ভুল করলেই ন্যাড়া সঞ্জীবের মাথায় থাপ্পড় মারত।
একদিন জঙ্গিপুর প্যাসেঞ্জারে উঠলাম, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার মেয়াটা নামলো... হাতে শাখা... কপালে সিঁদুর।
মেয়েটার বিয়ে হয়ে গিয়েছে... কলকাতা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের সাথে....। সঞ্জীব কী জানে?
এবার পূজোতে সঞ্জীব বাড়ি আসেনি। জোরকদমে কাজ করছে... ফ্যানের কারখানা....মিষ্টির দোকান...হোটেল....রেস্তোরাঁ....। টাক চাই... টাকা...টাকা...টাকা........।
ন্যাড়ার মুখে শুনলাম...... কিছুদিন আগে মিষ্টির দোকানের এক সহকর্মীর সাথে টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিবাদ হয়েছিল... সঞ্জীব হুমকি দিয়েছে...
"বেশি ধ্যানাই প্যানাই করলে মেরে মদের চাট বানিয়ে খেয়ে নেব।"
আজ সঞ্জীব বাড়ি এসেছে... র্যাকেট খেলার মাঠে নীল সোয়েটার পরে দাঁড়িয়ে... ভাবছি একবার ডাকবো কিনা....
- মেয়েলি সঞ্জীব.... অ্যাই 'সঞ্জীব ম্যাগি'....!
না থাক... আজ ক্যালিয়ে আমারই প্যান্ট না ভিজিয়ে দেয়...............।
হুমমম.....। আপনি কী যেন বলছিলেন! প্রেম খারাপ? ছেড়ে যায়...? ক্ষতি করে?
Sudip Sen
19 Dec 15
একটু বেলা হলে স্নান সেরে জামাকাপড় পরে বটি দিয়ে পেঁপেটা, মুলোটা, আলুটা কেটে সবজি রান্না করছে....।
ওর যে মা বাবা নেই...তা মোটেই বলা যাবেনা। এরকম দেখে আমি মাকে প্রায়শই জিজ্ঞেস করতাম.... ও এসব মেয়েদের কাজ করে কেন?
মা বলত ও মায়ের ভাল ছেলে...ওর নাম খোকন।
"খোকন খোকন করে মায়
খোকন গেছে কাদের নায়?
সাতটা কাকে দাঁড় বায়
খোকন রে তুই ঘরে আয়।"
বড় হওয়ার পর সঞ্জীবের প্রতি ভাবনার প্রভূত পরিবর্তন হয়। কেউকেউ মেয়েলি বলে ডাকে... তো কেউকেউ 'ম্যাগিমানুষ'। যখন ক্লাস টেন'এ উঠি... কে যেন বলেছিল মেয়েদের সাথে কথা বলার সময় সঞ্জীবের প্যান্ট ভিজে যায়। একদিন তো আমার সামনেই কেলেমামা বলল 'ভাই তুই যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ডি.কে রায় কে দ্যাখা।
সঞ্জীবের কাকার কলকাতা চায়ের দোকান। শনি-রবিবার বাড়িতে এলেই বৌদির পিছনপিছন বাজার করতে যায়... ম্যানম্যানে টাইপের... পাড়ার ছেলেরা সঞ্জীবের কাকাকে 'বৌদি' বলে ডাকত।
একটা সময় বিপদ বাধলো, সঞ্জীব নাকি এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার মেয়েটাকে পটিয়েছে। তখন বিবিসিতেও এই নিউজ টেলিকাস্ট হওয়ার উপক্রম... অলিতে গলিতে ফিসফিস " সঞ্জীব খাসা মাল পটিয়েছে.... সঞ্জীব খাসা মাল পটিয়েছে। "
মেয়াটা বয়সে বড় হলেও আমি যে এরকম একটা চান্স পেলে ছেড়ে দিতাম তা কখনো বলা যাবেনা...
রূপে সরস্বতী গুণে লক্ষ্মী... পাড়ার সবাই বোধহয় ভগবানকে হাত জোর করে প্রার্থনা করেছিল.....
'ভগবান! মেয়েলি সঞ্জীব এমন 'মাল' পেল...তাহলে আমরা কী দোষ করলাম? '
অত্যাশ্চর্য হয়ে গেলাম.... মেয়েটা নাকি সঞ্জীবকে জীবনে ভাল কিছু করে দ্যাখাতে বলেছে।
সঞ্জীব ন্যাড়ার সাথে কলকাতা গেলো ফ্যান সারায়ের কাজ শিখতে.... বিপত্তি তখনই বাঁধল। এমনিতেই ঠিকঠাক দেখতে পায়না, চশমা খুললে অন্ধ। ফ্যানের কয়েলে তামার তার জরাতে সে যে কী সমস্যা হত!.... ন্যাড়া আমায় বলত... আমি হাসতাম। ভুল করলেই ন্যাড়া সঞ্জীবের মাথায় থাপ্পড় মারত।
একদিন জঙ্গিপুর প্যাসেঞ্জারে উঠলাম, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার মেয়াটা নামলো... হাতে শাখা... কপালে সিঁদুর।
মেয়েটার বিয়ে হয়ে গিয়েছে... কলকাতা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের সাথে....। সঞ্জীব কী জানে?
এবার পূজোতে সঞ্জীব বাড়ি আসেনি। জোরকদমে কাজ করছে... ফ্যানের কারখানা....মিষ্টির দোকান...হোটেল....রেস্তোরাঁ....। টাক চাই... টাকা...টাকা...টাকা........।
ন্যাড়ার মুখে শুনলাম...... কিছুদিন আগে মিষ্টির দোকানের এক সহকর্মীর সাথে টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিবাদ হয়েছিল... সঞ্জীব হুমকি দিয়েছে...
"বেশি ধ্যানাই প্যানাই করলে মেরে মদের চাট বানিয়ে খেয়ে নেব।"
আজ সঞ্জীব বাড়ি এসেছে... র্যাকেট খেলার মাঠে নীল সোয়েটার পরে দাঁড়িয়ে... ভাবছি একবার ডাকবো কিনা....
- মেয়েলি সঞ্জীব.... অ্যাই 'সঞ্জীব ম্যাগি'....!
না থাক... আজ ক্যালিয়ে আমারই প্যান্ট না ভিজিয়ে দেয়...............।
হুমমম.....। আপনি কী যেন বলছিলেন! প্রেম খারাপ? ছেড়ে যায়...? ক্ষতি করে?
Sudip Sen
19 Dec 15
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন