পিঙ্কি...... ভাল আছো?
অগোছালো রাস্তার দিকে চেয়ে আমি ভাবতে থাকি, জীবনে কিছুই সাজানো হয়নি... এবার নিজেকে গোছানোর প্রয়োজন।
শিলিগুড়ির চম্পাসারির কালিমাতা বস্ত্রালয়ে সেলসম্যানের কাজ করতাম। আমার দায়িত্ব ছিল দোকানের লেডিস কর্ণার, সহজাত বাচনভঙ্গি মেয়েরা খুব পছন্দ করত। আমার দোকানের মালিক সাধারণত বেশিরভাগ সময় ফোনে প্রেমিকার সাথে কথা বলতেন, আমি ছাড়া আরেকজন যে সেলসের কাজ করতেন সেও বেশিরভাগ সময় ফোনে ব্যস্ত থাকত। একমাত্র আমি, যার কোনও গার্লফ্রেন্ড ছিল না।
দীপাবলির আগে দোকানে প্রচণ্ড ভীর থাকত। একমাত্র সপ্তাহের শেষের দিন আমি বন্ধুদের নিয়ে সূর্য সেন পার্কে যেতাম। আর বাকিদিন দোকান সামলাতাম।
একটা চুড়িদার নিয়ে একজন কাস্টোমারের সাথে বেশ সমস্যা দেখা দিচ্ছে কয়েকদিন ধরে, চুড়িদার ঠিকঠাক ফিট হচ্ছে না। মেয়েটা প্রায় রোজ আসে আর নতুন চুড়িদার এসেছে কিনা খোঁজ নিয়ে যায়। হঠাত, একদিন আমার ফোন নম্বর চেয়ে বসলো। আমি নিঃসঙ্কোচে দোকানের নম্বর বলতে থাকলাম, উনি আমার টাই চায়; দোকানে ফোন করলে নাকি কেউ চুড়িদারের ডেসক্রিপশন বর্ণনা করতে দেড়ঘন্টা লেগে যায়!
আমি যে নদীটা পাড় হয়ে চম্পাসারি যেতাম লোকে ওটাকে মহানন্দা বলতো। নদী বলার থেকে নালা বলাই ভাল, কারণ জিন্স প্যান্ট হাটুতে গুটিয়েই সেই নদী আরামসে পাড় হওয়া যেত। একদিন বিকেলে নদী পাড় হয়ে জিন্স নামাচ্ছি, হঠাত দেখি সেই মেয়েটি। আমি না দেখার ভাণ করে এগিয়ে যাচ্ছি, তারপর কানে আওয়াজ গেল....
জয়! জয়!
শিলিগুড়িতে পরিচিত নামে কেউ আমায় চিনতো না, সবাই জয় বলে ডাকতো।
আমি কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালাম। এ তো সেই পিঙ্কি চৌধুরী। যার ফোন নম্বর এখনো কন্ট্যাক্ট এ রয়ে গিয়েছে, নতুন সিমকার্ডে যেমন কিছু প্রিলোডেড কন্টাক্ট থাকে, সেরকমই। কোনোদিন ফোন করা হয়নি। আসলে ফোনে কী কথাই বা বলব! উনার পাঁচহাজার টাকার চুড়িদার আমার একমাসের আয়।
- ঘটি গরম খাবে?
কত সহজে অসাধারণ সুন্দরী একটি মেয়ে এমন প্রস্তাব দেয়! আমি আগে কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবিনি।
- খাওয়াই যেতে পারে।
আমরা ঘটি গরম খেতে খেতে নদীর পাড় বরাবর এগোচ্ছি। মাঝখানে ওর চুড়িদার নিয়েও কথা হয়েছিল। আর কী কী কথা হয়েছিল, এখন মনে পড়ছে না। তবে একটা সময় আমার দোকানের কাছে এসে পড়াই আমি ওকে বিদায় জানাই।
একদিন রাত্রে আমি বিড়ি ধরিয়ে হংকং মার্কেটের দিকে এগোচ্ছি। ফোন এল। স্যামসাং এর ফোল্ডিং সেটটা আনফোল্ড করতেই দেখি পিঙ্কি চৌধুরী।
চুড়িদার তখন বড় কোনও ইস্যু নয়, বরং
'আমি ভাল আছি, তুমি কেমন আছো? কী করছ?'
একদিন পিঙ্কিকে বললাম, 'চলো সেবক থেকে ঘুরে আসি।'
পিঙ্কির সেই উত্তরটা আমি কখনো আশা করিনি।
- যেদিন আমার বাড়ির সামনে চারচাকা আনতে পারবে, সেদিন ঘুরতে যেতে বোলো।
সত্যিই তো! আমি সামান্য এক দোকানের কর্মচারী। আমার সাথে পিঙ্কির কিভাবে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে?
আমি হতাশ হয়নি। বরং নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম। সব কিছু বড় লোকের টাইমপাশ ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম।
পরেরদিন পিঙ্কি সেজেগুজে আমার দোকানের সামনে হাজির।
- ঘুরতে যাবেনা?
আমি ব্লাউজ টা পাশে রেখে পিঙ্কির দিকে এগিয়ে গেলাম।
- তোমার সাইকেল আছে না?
- আছে।
- চলো, তুমি আমায় সাইকেলে চাপিয়ে চা বাগানে ঘুরতে নিয়ে যাবে।
পিঙ্কি আমার সাইকেলের সামনে চেপে আছে, আর মাঝেমাঝে আমার হাতের উপর ওর হাতটা রেখে বেল বাজাচ্ছে। সবাই আমাদের দেখছে, আমাদের বলা ভুল। সবাই পিঙ্কিকে দেখছে।
সেদিন চা বাগানে বাদাম চিবোতে চিবোতে আমরা অনেকটা হেটেছিলাম। পিঙ্কির সাদাটে পায়ের তলাটা আলতো লালচে হয়ে ফোসকা পড়েছিল। আমি ঠোঁট দিয়ে ওর পায়ের তলার নোংরা মুছেছিলাম।
তখন এয়ারসেলের আটানব্বই টাকাতে একমাস আনলিমিটেড কলিং প্যাক ছিল। আমরা দিনরাত কথা বলতাম। একদিন ও ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে চাইল। গেলাম।
পিঙ্কির বাবা একটা রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়। ওর মা বাবার ট্রান্সপোর্ট সংস্থায় সরকারি চাকরি পায়। পিঙ্কির বাড়িতে ওর মা ছাড়াও একটা বোন আরেকটা ভাই আছে।
পিঙ্কি পড়াশোনাতে অত্যন্ত ভাল। হঠাত করে একদিন দেখি আমার জন্য একটা টিশার্ট আর জিন্স কিনে এনেছে কারণ ও একটা সরকারি চাকরি পেয়েছে, স্কুলের শিক্ষিকা।
আমি খুব আনন্দিত হয়েছিলাম, কোনও কারণে একটা অজানা কষ্টও নিজের ভিতরে কাজ করছিল।
আমাদের বিয়ের ব্যাপারে পিঙ্কির মা প্রথমে আপত্তি করেছিল, আমার হাইট পিঙ্কির থেকে শর্ট।
ওর চিৎকার শুনেছিলাম সেদিন।
- জয়কে তুমি বিয়ে করবে নাকি আমি?
পিঙ্কির মা একদিন একান্তে আমায় ডাকে। স্বভাবতই মেয়ের মা'রা প্রেমের খলনায়ক। পিঙ্কির মা আমায় কিছু টাকা দিতে চেয়েছিল, সমাজে ওদের প্রভাব প্রতিপত্তি আছে, উনি চান আমি নিজে এই টাকা দিয়ে একটা দোকান করে প্রতিষ্ঠিত হই। প্রথমদিকে আমি রাজি ছিলাম। কিন্তু পরে অনেক ভাবলাম।
আমি যে পিঙ্কিকে বড় বেশি ভালবাসি। আমি পিঙ্কিকে সুখে রাখতে পারব? মেটাতে পারব ওর সমস্ত আবদার? নাকি ও নিজের শখ-ফুর্তিকে আমার জন্য প্রত্যেক মিনিটে কম্প্রোমাইজ করবে?
না.......আমি ওকে খুশি রাখতে পারবোনা।
দুএকদিন কাজে গিয়ে মন মরা হয়ে পরে থাকতাম, দোকানের মালিক আমায় প্রচণ্ড ভাল বাসতো। বিয়ে করতে বলেছিল, ভরসা দিয়েছিল সমস্ত রকম সাপোর্ট করবে।
আমায় ফোনে না পেয়ে পিঙ্কি বেশ কয়েকবার দোকানের মালিকের স্ত্রী, অর্থাৎ বৌদির কাছে গিয়েছিল। বৌদিও আমায় বিয়ে করতে বলে।
আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, পিঙ্কিকে ভাল রাখতে পারব না।
সেদিনই সব ছেড়ে পালিয়ে আসি, অনেক দূরের দূরদেশে। আজ দেড় বছর হয়ে গেল পিঙ্কির সাথে কোনো যোগাযোগ নেই, অথচ আজ হঠাত-ই ওর জন্য এমনে অনেক মন খারাপ জমা হয়েছে। কেমন আছে? বিয়ে করেছে? বাচ্চা হয়েছে? কী নাম রেখেছে?
কিচ্ছু জানে নেই। অথচ শিলিগুড়ির প্রত্যেকটা মার্কেট আমায় চেনে, প্রত্যেকটা চা বাগান আমাদের চেনে, চাবাগানের বড়বড় গাছ আমাদের চেনে, পনেরো টাকা প্লেটের মোমো আমাদের চেনে। চেনে না চিনতো........
আজ সবই অতীত, সবাই ভাবছে এ নিছক একটা গল্প। কিন্তু সেই চম্পসারির কালিমাতা বস্ত্রালয়ে কেউ যদি যাও....জয়ের কথা জিজ্ঞেস কোরো।
আর পারলে শুধিও পিঙ্কি চৌধুরী কেমন আছে....
Sudip Sen
27/11/15
অগোছালো রাস্তার দিকে চেয়ে আমি ভাবতে থাকি, জীবনে কিছুই সাজানো হয়নি... এবার নিজেকে গোছানোর প্রয়োজন।
শিলিগুড়ির চম্পাসারির কালিমাতা বস্ত্রালয়ে সেলসম্যানের কাজ করতাম। আমার দায়িত্ব ছিল দোকানের লেডিস কর্ণার, সহজাত বাচনভঙ্গি মেয়েরা খুব পছন্দ করত। আমার দোকানের মালিক সাধারণত বেশিরভাগ সময় ফোনে প্রেমিকার সাথে কথা বলতেন, আমি ছাড়া আরেকজন যে সেলসের কাজ করতেন সেও বেশিরভাগ সময় ফোনে ব্যস্ত থাকত। একমাত্র আমি, যার কোনও গার্লফ্রেন্ড ছিল না।
দীপাবলির আগে দোকানে প্রচণ্ড ভীর থাকত। একমাত্র সপ্তাহের শেষের দিন আমি বন্ধুদের নিয়ে সূর্য সেন পার্কে যেতাম। আর বাকিদিন দোকান সামলাতাম।
একটা চুড়িদার নিয়ে একজন কাস্টোমারের সাথে বেশ সমস্যা দেখা দিচ্ছে কয়েকদিন ধরে, চুড়িদার ঠিকঠাক ফিট হচ্ছে না। মেয়েটা প্রায় রোজ আসে আর নতুন চুড়িদার এসেছে কিনা খোঁজ নিয়ে যায়। হঠাত, একদিন আমার ফোন নম্বর চেয়ে বসলো। আমি নিঃসঙ্কোচে দোকানের নম্বর বলতে থাকলাম, উনি আমার টাই চায়; দোকানে ফোন করলে নাকি কেউ চুড়িদারের ডেসক্রিপশন বর্ণনা করতে দেড়ঘন্টা লেগে যায়!
আমি যে নদীটা পাড় হয়ে চম্পাসারি যেতাম লোকে ওটাকে মহানন্দা বলতো। নদী বলার থেকে নালা বলাই ভাল, কারণ জিন্স প্যান্ট হাটুতে গুটিয়েই সেই নদী আরামসে পাড় হওয়া যেত। একদিন বিকেলে নদী পাড় হয়ে জিন্স নামাচ্ছি, হঠাত দেখি সেই মেয়েটি। আমি না দেখার ভাণ করে এগিয়ে যাচ্ছি, তারপর কানে আওয়াজ গেল....
জয়! জয়!
শিলিগুড়িতে পরিচিত নামে কেউ আমায় চিনতো না, সবাই জয় বলে ডাকতো।
আমি কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালাম। এ তো সেই পিঙ্কি চৌধুরী। যার ফোন নম্বর এখনো কন্ট্যাক্ট এ রয়ে গিয়েছে, নতুন সিমকার্ডে যেমন কিছু প্রিলোডেড কন্টাক্ট থাকে, সেরকমই। কোনোদিন ফোন করা হয়নি। আসলে ফোনে কী কথাই বা বলব! উনার পাঁচহাজার টাকার চুড়িদার আমার একমাসের আয়।
- ঘটি গরম খাবে?
কত সহজে অসাধারণ সুন্দরী একটি মেয়ে এমন প্রস্তাব দেয়! আমি আগে কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবিনি।
- খাওয়াই যেতে পারে।
আমরা ঘটি গরম খেতে খেতে নদীর পাড় বরাবর এগোচ্ছি। মাঝখানে ওর চুড়িদার নিয়েও কথা হয়েছিল। আর কী কী কথা হয়েছিল, এখন মনে পড়ছে না। তবে একটা সময় আমার দোকানের কাছে এসে পড়াই আমি ওকে বিদায় জানাই।
একদিন রাত্রে আমি বিড়ি ধরিয়ে হংকং মার্কেটের দিকে এগোচ্ছি। ফোন এল। স্যামসাং এর ফোল্ডিং সেটটা আনফোল্ড করতেই দেখি পিঙ্কি চৌধুরী।
চুড়িদার তখন বড় কোনও ইস্যু নয়, বরং
'আমি ভাল আছি, তুমি কেমন আছো? কী করছ?'
একদিন পিঙ্কিকে বললাম, 'চলো সেবক থেকে ঘুরে আসি।'
পিঙ্কির সেই উত্তরটা আমি কখনো আশা করিনি।
- যেদিন আমার বাড়ির সামনে চারচাকা আনতে পারবে, সেদিন ঘুরতে যেতে বোলো।
সত্যিই তো! আমি সামান্য এক দোকানের কর্মচারী। আমার সাথে পিঙ্কির কিভাবে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে?
আমি হতাশ হয়নি। বরং নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম। সব কিছু বড় লোকের টাইমপাশ ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম।
পরেরদিন পিঙ্কি সেজেগুজে আমার দোকানের সামনে হাজির।
- ঘুরতে যাবেনা?
আমি ব্লাউজ টা পাশে রেখে পিঙ্কির দিকে এগিয়ে গেলাম।
- তোমার সাইকেল আছে না?
- আছে।
- চলো, তুমি আমায় সাইকেলে চাপিয়ে চা বাগানে ঘুরতে নিয়ে যাবে।
পিঙ্কি আমার সাইকেলের সামনে চেপে আছে, আর মাঝেমাঝে আমার হাতের উপর ওর হাতটা রেখে বেল বাজাচ্ছে। সবাই আমাদের দেখছে, আমাদের বলা ভুল। সবাই পিঙ্কিকে দেখছে।
সেদিন চা বাগানে বাদাম চিবোতে চিবোতে আমরা অনেকটা হেটেছিলাম। পিঙ্কির সাদাটে পায়ের তলাটা আলতো লালচে হয়ে ফোসকা পড়েছিল। আমি ঠোঁট দিয়ে ওর পায়ের তলার নোংরা মুছেছিলাম।
তখন এয়ারসেলের আটানব্বই টাকাতে একমাস আনলিমিটেড কলিং প্যাক ছিল। আমরা দিনরাত কথা বলতাম। একদিন ও ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে চাইল। গেলাম।
পিঙ্কির বাবা একটা রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়। ওর মা বাবার ট্রান্সপোর্ট সংস্থায় সরকারি চাকরি পায়। পিঙ্কির বাড়িতে ওর মা ছাড়াও একটা বোন আরেকটা ভাই আছে।
পিঙ্কি পড়াশোনাতে অত্যন্ত ভাল। হঠাত করে একদিন দেখি আমার জন্য একটা টিশার্ট আর জিন্স কিনে এনেছে কারণ ও একটা সরকারি চাকরি পেয়েছে, স্কুলের শিক্ষিকা।
আমি খুব আনন্দিত হয়েছিলাম, কোনও কারণে একটা অজানা কষ্টও নিজের ভিতরে কাজ করছিল।
আমাদের বিয়ের ব্যাপারে পিঙ্কির মা প্রথমে আপত্তি করেছিল, আমার হাইট পিঙ্কির থেকে শর্ট।
ওর চিৎকার শুনেছিলাম সেদিন।
- জয়কে তুমি বিয়ে করবে নাকি আমি?
পিঙ্কির মা একদিন একান্তে আমায় ডাকে। স্বভাবতই মেয়ের মা'রা প্রেমের খলনায়ক। পিঙ্কির মা আমায় কিছু টাকা দিতে চেয়েছিল, সমাজে ওদের প্রভাব প্রতিপত্তি আছে, উনি চান আমি নিজে এই টাকা দিয়ে একটা দোকান করে প্রতিষ্ঠিত হই। প্রথমদিকে আমি রাজি ছিলাম। কিন্তু পরে অনেক ভাবলাম।
আমি যে পিঙ্কিকে বড় বেশি ভালবাসি। আমি পিঙ্কিকে সুখে রাখতে পারব? মেটাতে পারব ওর সমস্ত আবদার? নাকি ও নিজের শখ-ফুর্তিকে আমার জন্য প্রত্যেক মিনিটে কম্প্রোমাইজ করবে?
না.......আমি ওকে খুশি রাখতে পারবোনা।
দুএকদিন কাজে গিয়ে মন মরা হয়ে পরে থাকতাম, দোকানের মালিক আমায় প্রচণ্ড ভাল বাসতো। বিয়ে করতে বলেছিল, ভরসা দিয়েছিল সমস্ত রকম সাপোর্ট করবে।
আমায় ফোনে না পেয়ে পিঙ্কি বেশ কয়েকবার দোকানের মালিকের স্ত্রী, অর্থাৎ বৌদির কাছে গিয়েছিল। বৌদিও আমায় বিয়ে করতে বলে।
আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, পিঙ্কিকে ভাল রাখতে পারব না।
সেদিনই সব ছেড়ে পালিয়ে আসি, অনেক দূরের দূরদেশে। আজ দেড় বছর হয়ে গেল পিঙ্কির সাথে কোনো যোগাযোগ নেই, অথচ আজ হঠাত-ই ওর জন্য এমনে অনেক মন খারাপ জমা হয়েছে। কেমন আছে? বিয়ে করেছে? বাচ্চা হয়েছে? কী নাম রেখেছে?
কিচ্ছু জানে নেই। অথচ শিলিগুড়ির প্রত্যেকটা মার্কেট আমায় চেনে, প্রত্যেকটা চা বাগান আমাদের চেনে, চাবাগানের বড়বড় গাছ আমাদের চেনে, পনেরো টাকা প্লেটের মোমো আমাদের চেনে। চেনে না চিনতো........
আজ সবই অতীত, সবাই ভাবছে এ নিছক একটা গল্প। কিন্তু সেই চম্পসারির কালিমাতা বস্ত্রালয়ে কেউ যদি যাও....জয়ের কথা জিজ্ঞেস কোরো।
আর পারলে শুধিও পিঙ্কি চৌধুরী কেমন আছে....
Sudip Sen
27/11/15
0 Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন